সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ মুবারক হো! পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করার তরতীব:
সাইয়্যিদে
ঈদে আ’যম ওয়া ঈদে আকবর পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম তথা পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তরতীব সম্পর্কে মহান
আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেন-
“হে
হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি
সাক্ষ্যদাতা, সু-সংবাদদাতা ও ভয়প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা মহান আল্লাহ
পাক উনার ও উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনো এবং উনার খিদমত মুবারক করো,
তাযীম-তাকরীম মুবারক করো ও ছানা-ছীফত মুবারক অর্থাৎ প্রশংসা করতে থাকো সকাল
থেকে সন্ধ্যা অর্থাৎ দায়িমীভাবে”। (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ: পবিত্র আয়াত
শরীফ ৮-৯)
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে
অত্যন্ত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর
পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ঈমান আনাই হলো সমস্ত
কায়িনাতের জন্য প্রথম দায়িত্ব। এরপর সম্মানিত ঈমানদার মুসলমানগণ উনাদের
দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করা, দ্বিতীয়ত উনার তাযীম-তাকরীম
মুবারক করা, তৃতীয়ত উনার ছানা-ছীফত মুবারক করা। আর এই বিষয়গুলো করতে হবে
সকাল থেকে সন্ধ্যা তথা দায়িমীভাবে সর্বক্ষণ। সুবহানাল্লাহ!
১) খিদমত
মুবারক: নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার অগণিত বেমেছাল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন
করে গেছেন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা। যেমন-
সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার সম্পর্কে পবিত্র
হাদীছ শরীফ উানর মাঝে বর্ণিত আছে- তাবুকের জিহাদের প্রস্তুতিকালে একদিন
সাইয়্যিদুনা হযরত উসমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি ১ হাজার
স্বর্ণমুদ্রা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম উনার মুবারক খিদমত মুবারকে পেশ করলেন। আর সেই স্বর্ণমুদ্রাগুলো
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি
উনার কোর্তা মুবারকে নিয়ে নাড়াচাড়া করছিলেন আর বলেছিলেন- এরপর থেকে
সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে আর কোনো আমল ক্ষতিগ্রস্ত
করতে পারবে না। সুবহানাল্লাহ!
২) তা’যীম-তাকরীম মুবারক: পবিত্র হাদীছ
শরীফ উনার মাঝে বর্ণিত আছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ও উনার সম্মানিত আহলু বাইত শরীফ
আলাইহিমুস সালাম উনাদের মহাপবিত্র শান মুবারকে অবমাননাকর কথা বলার অপরাধে
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা কাট্টা কাফির কাব বিন আশরাফ
ও আবু রফে নামক দুই মুনাফিককে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে ও হিকমতের সাথে
মৃত্যুদ- কার্যকর করেন। দুই কাফিরের প্রতি মৃত্যুদ- জারি করে হযরত ছাহাবায়ে
কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার তাযীম-তাকরীম উনার এক সুমহান আদর্শ
প্রতিষ্ঠা করেছেন।
৩) ছানা-ছিফত মুবারক: মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র
কালামুল্লাহ শরীফ উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেছেন- “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক
তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা নূরে মুজাসসাম
হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র
ছলাত শরীফ অর্থাৎ পবিত্র দুরূদ শরীফ পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও উনার
প্রতি পবিত্র ছলাত শরীফ পাঠ করো এবং সালাম মুবারক দাও, দেয়ার মতো অর্থাৎ
অত্যন্ত আদবের সাথে”। (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)
স্বয়ং
মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা নূরে
মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার
ছানা-ছীফত মুবারক করে পবিত্র ছলাত শরীফ পেশ করে থাকেন। এবং মু’মিন
মুসলমানদের প্রতিও পবিত্র ছলাত শরীফ ও সালাম মুবারক পেশ করার আদেশ মুবারক
করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে দায়িমীভাবে
অনন্তকালব্যাপী পবিত্র খিদমত মুবারক, সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক,
ছানা-ছীফত মুবারক করে পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করার তাওফীক দান
করুন। (আমীন)